কোচবিহার: আইপ্যাকের একটি টিম কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারের ছক ঠিক করে দিচ্ছে। ১০-১২ জনের ওই টিম কোচবিহার শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে রয়েছে। সকাল সকাল বের হয়ে তারা গোটা জেলা চষে বেড়াচ্ছে। শাসকদলের খামতি তুলে এনে সেভাবে নেতৃত্বকে এলাকা ধরে ধরে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছে আইপ্যাক। অন্যদিকে, বুথে বুথে জনসংযোগ বাড়াতে বাড়ির মহিলা সদস্যদের হাতে বিশেষ লিফলেট তুলে দিচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাতে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থেকে কেন্দ্রের না পারা কাজের ফিরিস্তি থাকছে।
ভোটে জিততে এবার দ্বিমুখী পরিকল্পনা কোচবিহার জেলা তৃণমূলের। একদিকে আইপ্যাকের টিম প্রচার থেকে শুরু করে ত্রুটিবিচ্যুতি ঠিক করে দিচ্ছে। বিক্ষুদ্ধ থেকে বসে যাওয়া নেতাদের বাড়িতে যাওয়া, এলাকার বিশিষ্টদের সম্মাননা দেওয়ার পরিকল্পনা সবটাই করছেন তাঁরা। অন্যদিকে, অঞ্চল সভাপতিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের হোমওয়ার্ক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার কী করেছে, কেন্দ্র কী করেনি, তার লিফলেট দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ স্টিকার লাগানো হচ্ছে প্রত্যেক বাড়িতে। এমনকি বাসিন্দাদের কী সমস্যা রয়েছে, রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে কলকাতায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে ফোনও করানো হচ্ছে।
কোচবিহার শহরে বেশ কিছুদিন
ধরেই আইপ্যাকের টিমটি রয়েছে। টিমে কয়েকজন মহিলা সদস্যও রয়েছেন। তাঁরা তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারের একটি অংশ দেখছেন। কোন এলাকায় প্রচার বেশি করতে হবে, কোথায় ফ্লেক্স, ব্যানার লাগাতে হবে, প্রচারের সামনের সারিতে কারা থাকবেন তার রূপরেখা ঠিক করছে তারা। আবার গ্রাম থেকে শহর ঘুরে তারা তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে গিয়ে এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টাও করছেন। পাড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মন পেতে স্থানীয় নেতৃত্বকে ফুল, মিষ্টি নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের হাতে তৃণমূলের অঞ্চল নেতৃত্ব দুটো করে লিফলেট দিচ্ছে। তার একটিতে রাজ্য সরকার কী সুবিধা দিচ্ছে, কত প্রকল্প করেছে তার বিবরণ রয়েছে।
অন্যটিতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কী করতে পারেনি, কেন ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার ঘরের বরাদ্দ দিচ্ছে না, সেসব বিষয়ে লেখা রয়েছে। এমনকি বাড়ির সদস্যদের অনুমতি নিয়ে একটি করে তৃণমূলের জোড়াফুলের স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেওয়ালে। আবার একটি বিশেষ নম্বরে ফোন করে সমস্যা, সুযোগসুবিধা নিয়ে ছোট বিবরণ দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্ব বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করছে কিনা, সেটাও কলকাতায় বসে জিপিএসের মাধ্যমে ট্র্যাক করছে শীর্ষ নেতৃত্ব। এসবই হচ্ছে আইপ্যাকের পরামর্শে।