বর্ধমান: কয়লা কারবারী রাজু ঝা খুনের ঘটনায় অধরাই ছিল অন্যতম শার্প শুটার কুন্দন কুমার সিং। ঘটনার পর থেকে পাঁচ মাস ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ একাধিক পড়শি রাজ্য চষে বেরিয়েও কুন্দনের নাগাল পায়নি। সেই কুন্দন কুমারই এবার ধরা পড়ল নদিয়ার রানাঘাটের একটি নামী সংস্থার গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনায়।
বিহারের বৈশালী জেলার কুখ্যাত শার্প শুটার কুন্দন রানাঘাটকাণ্ডে ধরা পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। শুরু হয়েছে রাজু ঝাকে খুনের ঘটনার মূল মাথা কুন্দন কুমারকে হেপাজতে নেওয়ার তোড়জোড়। জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা মনে করছেন, কুন্দন কুমারকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মিলতে পারে রাজু ঝা খুনের মূল চক্রীদের নাম।
কয়লা পাচার মামলায় ইডি দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার ঠিক একদিন আগে অর্থাৎ ১ এপ্রিল ভরসন্ধ্যায় শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানের সামনে খুন হন রাজু ঝা। নিখুঁত নিশানায় পরপর গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতী কয়লা কারবারীর শরীর ঝাঁঝরা করে দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই পুলিশের তরফে গঠিত হয় ‘সিট’। পাশাপাশি সিবিআই ও ইডি রাজু ঝা-র খুন হওয়ার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। খুনিদের নাগাল পেতে সিটের তদন্তকারী অফিসাররা দুর্গাপুর সহ পড়শি রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ডেও হানা দেয়। পরে ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেও পুলিশ কুন্দন কুমারেকে জালে পুরতে পারেনি। অথচ এই কুন্দন কুমারই দীর্ঘ দেড় মাস ধরে নদিয়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা কেন কুন্দন কুমারের নাগাল পেল না? জেলা পুলিশ কি কুন্দন কে ধরার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দিয়েছিল? নাকি পুলশের চোখে ধুলো দিয়ে এই রাজ্যে অপরাধ সংগঠিত করার জন্য বিহারে কুন্দন নিজের ভোল পালটে ফেলেছিল? জেলা পুলিশের কোনও কর্তা এদিন এবিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে কুন্দন কুমারকে জেরা করলে রাজু ঝা খুনের ঘটনার মূল চক্রীদের নাম যে প্রকাশ্যে চলে আসবে সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিৎ পুলিশ কর্তারা। সূত্রের খবর, কুন্দন কুমারকে জেরার প্রশ্ন মালাও তৈরি শুরু করে দিয়েছেন তদন্তকারীরা।