নাগরাকাটাঃ অভিশপ্ত এসএমভিটি বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্টের একই কোচে ছিলেন নাগরাকাটায় একই পাড়ায় এক সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা ১২ বন্ধু। তবে সাগর খারিয়া ও দুর্গা বরাইক বসেছিলেন আলাদা কম্পার্টমেন্টে। দুর্ঘটনার ঘন্টা খানেক আগে সাগরদের তাঁদের সাথে এসে বসার জন্য ডেকেছিলেন মাঝে এক কম্পার্টমেন্ট ছেড়ে অন্যটিতে বসা ৮ জন। জানালার ধারের সিট। তাই সাড়া দেননি সাগর। সেটাই হয়তো কাল হল তাঁর জীবনে। অভিশপ্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সাগরের।
এটা নিয়ে আক্ষেপ যেন আর পিছু ছাড়ছে না অন্যদের। বন্ধুকে চিরতরে হারিয়ে ও নিজেরাও মৃত্যুকে ছুঁয়ে এসে এখনও ট্রমার মধ্যে রয়েছেন বেঁচে ফেরা নাগরাকাটা চা বাগানের যুবকরা। গত রবিবার তাঁরা বাড়ি ফিরলেও যেহেতু তাঁরা মারাত্মক শক পেয়েছেন সেকারনে এদিন ৯ জনকে সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করে প্রশাসন। তাঁদের দেখতে এদিন বিকেলে আসেন জলপাইগুড়ির জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু, মালবাজারের মহকুমা শাসক পিযূষ ভগবানরাও সালুঙ্কে সহ অন্য আধিকারিকরা। জেলা শাসক বলেন, ‘এত বড় দুর্ঘটনা। স্বাভাবিকভাবেই ওঁরা একটু ট্রমার মধ্যে রয়েছে। কারো যাতে বিন্দুমাত্র কোন সমস্যা না থাকে সেকারনে সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ রোহিত গোস্বামী নামে এক যুবক জানান, সাগরের স্মৃতি কিছুতেই ভুলতে পারছি না। দুর্ঘটনার সন্ধ্যায় ৬ টা নাগাদ পাশের কম্পার্টমেন্ট থেকে ও যখন শৌচালয়ে যাচ্ছিল তখনই আমাদের সাথে এসে বসার কথা বলি। জানালার ধারে আরামে রয়েছে সেকথা জানিয়ে ও আর আসেনি। এদিকে সাগরের দেহ বালেশ্বর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের যে হাসপাতালে ছিল সেখান থেকে জেলা প্রশাসনের পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। নাগরাকাটার বিডিও বিপুল কুমার মণ্ডল সন্ধ্যায় জানান, আশা করছি রাতের মধ্যেই দেহ চলে আসবে।