গাজোল: বছরের অন্যান্য সময় শ্রীমতি নদীতে জল থাকে না বললেই চলে। কিন্তু বর্ষার সময় এই নদী হয়ে ওঠে ‘শ্রীমতি ভয়ংকরী’। প্রবল স্রোতে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমি, বাঁশ বাগান, বাড়িঘর। গত ১০ বছর ধরে ওই এলাকায় ভাঙন চললেও গত দু’বছর ধরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তবে এবছর ভাঙন সব থেকে বেশি। নদীপাড় তো ভাঙছেই, সব থেকে ভয়ের কথা বসতি এলাকার উপরিভাগ ঠিক থাকলেও মাটির নীচ দিয়ে নদী কাটতে কাটতে চলে যাচ্ছে। এরপর হঠাৎ করেই ধস নামছে বসতি এলাকায়। মাটির তলায় চলে যাচ্ছে ঘরবাড়ি জমি জায়গা। আর এতেই ঘুম উড়েছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের।
বর্তমানে এমনই অবস্থা গাজোলের আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের মোবারকপুর, মহাকাল বোনা, সুরোমনি, বেড় প্রভৃতি এলাকার। ব্যাপক পরিমাণে ভাঙন চললেও বিষয়টি অজানা ছিল প্রশাসনের। এবছর তেমনভাবে কাউকে জানানো হয়নি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ভাঙন পীড়িত বাসিন্দারা। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়েছে ব্লক প্রশাসন। বিডিওর নির্দেশে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের আধিকারিক সৌরভ দত্ত। এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা বলেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন। নির্দিষ্ট জায়গায় আবেদন জানিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকায় কীভাবে ভাঙন রোধ করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন সভাপতি।
সেচ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, নদীভাঙন এবং বন্যা এবার চরম আকার ধারণ করেছে। উত্তরের জেলাগুলিও যেমন ভাঙন এবং বন্যার কবলে পড়েছে, তেমনি মালদা জেলাতেও এই সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করেছে। নদীভাঙন রুখতে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। তবে যেহেতু এগুলো জাতীয় সমস্যা তাই সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। ভাঙনের খবর পেলে সেচ দপ্তরের আধিকারিক সেই সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। ভাঙন কবলিত ওই সমস্ত এলাকাতেও সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শন করবেন। ওদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।