জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির হেরিটেজ সম্পত্তি নিয়ে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা এখনও বিচারাধীন। রাজপ্রাসাদের বাইরে কোন কোন সম্পত্তি হেরিটেজ তকমা পাবে তা নিয়ে এখনও শুনানি শুরু হয়নি। দিঘি, মন্দির, মেলার মাঠ সহ ফাঁকা জমির কোনগুলি হেরিটেজ, তা নিয়ে জেলা প্রশাসন, হেরিটেজ কমিশন, জলপাইগুড়ি পুরসভা গত বছর নিজেদের পৃথক হলফনামা আদালতে জমা দিয়েছে। এই অবস্থায় রাজবাড়ির শতাব্দীপ্রাচীন দিঘির জল আবর্জনা ফেলে দূষিত করে তোলা হচ্ছে, অথচ প্রশাসন থেকে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে অবশেষে রাজপরিবারের তরফেই উদ্যোগ নেওয়া হল। তাঁরা এব্যাপারে দিঘির চারপাশে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন।
রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী প্রসন্নদেব রায়কতের ছেলে গৌরীশংকরদেব রায়কত রাজবাড়িদিঘি, ফাঁকা জমি সহ মন্দিরকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দিয়ে সংরক্ষণের দাবিতে সার্কিট বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। আদালত হেরিটেজ কমিশন, প্রশাসন, পুরসভাকে সম্পত্তির পর্যবেক্ষণ, সীমানা নির্ধারণ করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, বিষয়টি নিয়ে গৌরীশংকরদেব রায়কত ও রাজকুমারী প্রতিভা দেবীর ছেলে প্রণত বসুর বক্তব্যে সমন্বয় না পাওয়ায় রাজপ্রাসাদ বাদে আর কী কী সম্পত্তি হেরিটেজ স্বীকৃতি পাবে তা নিয়ে পুরসভা ও জেলা প্রশাসন আদালতে পৃথক হলফনামা জমা করেছে। এখনও মামলার শুনানি শুরু হয়নি।
এই অবস্থায় দিঘি সংরক্ষণে রাজপরিবারের এগিয়ে আসার বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। দিঘিতে আবর্জনা ফেললে মাছ মরে যাবে, জল দূষিত হবে। তাই দিঘির জল নোংরা করলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রাজবাড়ির তরফে সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে।
রাজপরিবারের সদস্য সৌম্য বসু বলেন, ‘বিচারাধীন মামলা নিয়ে মন্তব্য করব না। আমাদের পরিবার বংশপরম্পরায় রাজবাড়িতে বসবাস করছে। দিঘির জলে অনেক মাছ আছে। লোকজন দেখতে আসেন। দিঘির জল কোনও অবস্থাতেই দূষিত করা যাবে না। তাই সাইনবোর্ড টাঙিয়ে মানুষজনকে সতর্ক করা হয়েছে। পুরসভাকে বলেও আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিন না দেওয়াতে আবর্জনা দিঘিতে ফেলছেন অনেকে। কিন্তু এটা হতে দেওয়া যাবে না।’
রাজপরিবারের কুলপুরোহিত শিবু ঘোষালের কথায়, ‘এই দিঘি পবিত্র। রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমা এখানে বিসর্জন দেওয়া হয়। তারপর দিঘি সাফাই করা হয়। সারাবছর যাতে কেউ আবর্জনা না ফেলেন, তাই এই ব্যবস্থা।’