দক্ষিণবঙ্গ ব্যুরো: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব ঘিরে রণক্ষেত্র জেলায় জেলায়। মুর্শিদাবাদের রানিনগরের পর শনিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ডোমকল। তুলকালাম কাণ্ড বাধে এলাকায়। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের দ্বিতীয় দিনে রণক্ষেত্র চেহারা নেয় এলাকা। সিপিএম-কংগ্রেসকে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, ডোমকল বিডিও অফিস ঘিরে রেখেছে তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনী। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের এখনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ ওঠে।
শুক্রবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা। প্রথম দিনই মুর্শিদাবাদে চলে গুলি। মৃত্যু হয় এক কংগ্রেস কর্মীর। মুর্শিদাবাদের কান্দির খড়গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত কংগ্রেসকর্মীর নাম ফুলচাঁদ শেখ। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি করে হত্যা করেছে ফুলচাঁদকে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। এই ঘটনার পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় খড়গ্রামের রতনপুর এলাকায়। এদিকে কংগ্রেসকর্মীর হত্যার ঘটনার পর রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। অবিলম্বে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসককে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকালের পর এদিনও অশান্ত হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদ।
এদিকে মনোনয়ন পর্ব ঘিরে এদিন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আসানসোলের বারাবনিতে। বারাবনি ব্লকের বিডিও অফিস চত্বরে অশান্তির সৃষ্টি হয়। তৃণমূল-সিপিএম কর্মীদের সংঘর্ষে তুলকালাম কাণ্ড বাধে এলাকায়। একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিন সিপিএমের প্রার্থীর ডিসিআর নিতে কর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে বিডিও রণক্ষেত্র চেহারা নেয় এলাকা। পুলিশ কোনমতে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবারও বারাবনি বিডিও অফিসে সিপিএমের ১৫ প্রার্থীর ডিসিআর কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা নিয়ে সিপিএমের তরফে জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। শনিবারও এমন কোনও ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা ছিলো। সিপিএমের অভিযোগ, এদিন সকাল থেকেই বারাবনি বিডিও অফিস ঘিরে রেখেছিল তৃণমূল আশ্রীত দুষ্কৃতীরা। পুলিশ থাকলেও, তারা কিছু করেনি। পুলিশের সামনেই তৃণমূল আশ্রীত দুষ্কৃতীরা সিপিএমের কর্মীদের বাধা দিলে, সংঘর্ষের চেহারা নেয়। সিপিএমের বারাবনি এরিয়া সম্পাদক তপন দাস বলেন, দলের কর্মীরা ডিসিআর কাটতে গেলে আটকানো হয়। তৃণমূলের লোকেরা দু-তিনজনকে মারধর করেছে। তবে আমরা সেই বাধা উপেক্ষা করে বিডিও অফিসে ঢুকেছি। তবে রাজ্যের শাসক দলের তরফে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
মনোনয়ন পর্ব ঘিরে উত্তপ্ত রয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরও। বিজেপি প্রার্থীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। বীরভূমের লাভপুরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সমস্ত ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে অশান্তির ঘটনায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এটাই ভাইপোর নবজোয়ারের ফল। খুনি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বাংলায় তৃণমূলকে শূন্য করব’।