পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: নেদারল্যান্ডস (Netherlands) থেকে লিলি ফুলের কন্দ (Tuber) এনে ফুলের চাষ করে মাত্র আড়াই মাসেই সাফল্য পেল রাজ্যের উদ্যানপালন দপ্তর। জলপাইগুড়ি শহরতলির মোহিতনগর ফার্মে এবং বন্ধুনগরে এই লিলি ফুলের চাষ করা হয়েছে। উদ্যোগ সফল হওয়ায় এবার উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সরকারি ভরতুকিযুক্ত প্রকল্পে লিলি ফুলের চাষকে অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এশিয়াটিক ও ওরিয়েন্টাল– এই দুই প্রজাতির লিলি ফুলের কদর রয়েছে বাজারে। তবে ওরিয়েন্টাল প্রজাতির চাহিদা কিছুটা বেশি। মোহিতনগরে এশিয়াটিক প্রজাতির এবং বন্ধুনগরে ওরিয়েন্টাল প্রজাতির (Species) ফুলের চাষ করা হয়। সব মিলিয়ে নেদারল্যান্ডস থেকে মোট ১০ হাজার কন্দ আনা হয়েছিল। উল্লেখ্য, সমতল এলাকায় লিলি ফুলের চাষের জন্য আদর্শ হল দিনে ১৮ থেকে ২৫ ডিগ্রি এবং রাতে ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। একটি কন্দ ২০ টাকা দিয়ে কিনে ফুল চাষ করলে সেই ফুলের স্টিক ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা খুরশিদ আলম জানান, ‘যাঁরা খোলা আকাশের নীচে এই ফুলের চাষ করবেন, তাঁদের মোট খরচের ৪০ শতাংশ এবং যাঁরা পলি হাউসে চাষ করবেন, তাঁদের মোট খরচের ৫০ শতাংশ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভরতুকির (Subsidy) ব্যবস্থা করা হবে।’
সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিয়ের মরশুমে লিলি ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। সমতল এলাকায় নভেম্বর মাসে চাষ শুরু করলে জানুয়ারিতে ফুল পাওয়া যায়। পাহাড়ি এলাকায় এই ফুলের চাষ করা হয় সাধারণত এপ্রিল ও মে মাসে। অসম, উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল ও ভুটানের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বাজারেও এই ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিয়ে ছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানের অর্কিডের মতো লিলি ফুলেরও চাহিদা থাকে। উদ্যানপালন দপ্তর (Department of Horticulture) সূত্রে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে লিলি ফুলের চাষের প্রসার ঘটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে চাষিদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। আগ্রহী চাষিদের মোহিতনগরে ডেকে ফুল চাষের পদ্ধতি হাতেকলমে শেখানো হবে।