আলিপুরদুয়ার: দুর্গাপুজো শেষ। কয়েকদিন আগে শেষ হল লক্ষ্মী পুজোও। এবার প্রহর গোনা শুরু হয়েছে কালীপুজো নিয়ে। আলিপুরদুয়ারবাসীরাও কিন্তু দিন গুনতে শুরু করেছে দীপাবলির অপেক্ষায়। আলিপুরদুয়ার শহরে যেমন বেশ কিছু বড় দুর্গাপুজোয় প্রতিবার চমক থাকে,তেমনই কালীপুজোর সময়ও একই চমক থাকে।শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছু বড় পুজো হয়। এবারও একইভাবে আয়োজন করা হচ্ছে পুজো গুলোর। আর যে কালীপুজো কমিটিগুলো পুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছে তাদের মধ্যে অনেকটা এগিয়ে এনএফ রেলওয়ে বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনর কালীপুজো। কেননা দুর্গাপুজোর আগে থেকে একমাত্র এই কমিটির কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এই কাজ চলছে জোর কদমে। প্রায় দশ বছর পর আবার বড় পুজোর উদ্যোগ নিয়েছে এনএফ রেলওয়ে বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন।
জংশন ডিআরএম মাঠে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। এবারের পুজোর বিষয়ে বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক বাদশা রায়ের বক্তব্য, ‘আমাদের পুজো বরাবরই বড় করে হয়ে আসছে। কিছু সমস্যার জন্য কয়েক বছর ছোট করে পুজো হয়েছে আমাদের অফিসে। এবার ২৫তম পুজো। তাই আবার বড় করে পুজো করা হচ্ছে। ভালো মণ্ডপসজ্জা, আলোকসজ্জা যেমন থাকবে তেমনই পুজোর কয়েকদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকছে।দিল্লি, মুম্বই থেকে শিল্পীরা এসে অনুষ্ঠান করবে।’ এবছর এই কমিটির পুজো মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে কর্ণাটকের বিধানসভার আদলে। আলিপুরদুয়ারের শিল্পী বাবাই পাল এবং কলকাতার শিল্পী তাপস হাজরা এই মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন। এদিন বাবাই জানান, এই মুহূর্তে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। প্রতিদিন প্রায় ২০০ শ্রমিক এই কাজে যুক্ত রয়েছেন।
শিল্পীরা জানান, কর্ণাটক বিধানসভার বাইরের দৃশ্য ফুট উঠবে মণ্ডপে। বিধানসভার হল ঘরের মত হবে মণ্ডপের ভিতরের অংশ। মূল মণ্ডপের দৈর্ঘ্য হচ্ছে প্রায় ৭৫ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ২৫০ ফুট। এত বড় মণ্ডপের মূল কাজে ব্যবহার হয়েছে প্রায় ৬ হাজার বাঁশ। প্রথমের বাঁশের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে প্লাই লাগানোর কাজ।প্রায় ২ হাজার প্লাই ব্যবহার করা হবে মণ্ডপ তৈরির কাজে। প্লাই লাগানোর কাজের মাঝে রং করার কাজও দু’একদিনের মধ্যে শুরু হবে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বাঁশ, প্লাই ছাড়াও মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে লোহার হেঙ্গার ও মিরার শিট।
মূল মণ্ডপের সমানে আবার ইন্ডিয়া গেটের আদলে আরেকটি মণ্ডপ তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও চন্দননগরের চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে মণ্ডপের থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। আগামী ৯ নভেম্বর পুজোর উদ্বোধন হবে বলে ঠিক হয়েছে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের এবারের পুজোর বাজেট প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। পুজোর জন্য কিন্তু অন্য জায়গা থেকে চাঁদা সংগ্রহ করা হয় না এই পুজোর। অ্যাসোসিয়েশনের ১৬০ জন সদস্য নিজেদের পেকেটের টাকায় পুজোর আয়োজন করছেন। দুর্গাপুজোয় যেমন কিছু বিগ বাজেটের পুজো নিয়ে জোর আলোচনা ছিল, তেমনই এই কালীপুজো নিয়েও জোর আলোচনা চলছে আলিপুরদুয়ারজুড়ে।