পূর্ণেন্দু সরকার,জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্স ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে কিশোর-কিশোরীদের নেপাল দিয়ে পাচার করা হচ্ছে আরব দুনিয়ায়। একইভাবে নেপাল থেকেও অনেক কিশোর নিখোঁজ (Missing) হয়ে ভারতে চলে আসছে। নেপালকে ট্রানজিট পয়েন্ট (Transit Point) করে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে অনেক ছেলেমেয়ে পাচারের অভিযোগ আসছে। তাই নেপাল সীমান্ত দিয়ে মানব পাচার (Human Trafficking) রুখতে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের শীর্ষ আধিকারিকরা বৃহস্পতিবার বৈঠক করতে জলপাইগুড়ি আসছেন। উত্তরবঙ্গের তিন জেলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার ও শিশু সুরক্ষা আধিকারিক ছাড়াও নেপাল সীমান্তে দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও বৈঠকে যোগ দেবেন। বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন ওয়েস্ট বেঙ্গল টাস্ক ফোর্স অন ট্রাফিকিং রেস্টোরেশন রেসকিউ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের অধিকর্তা নীলাঞ্জনা দাশগুপ্ত।
বিভিন্ন সময়ে নেপালের অনেক ১৮ বছরের নীচের কিশোররা বিভিন্ন কারণে শিলিগুড়ির কাছে নেপাল সীমান্ত দিয়ে উত্তরবঙ্গের এই জেলাগুলিতে চলে আসছে। পরে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সরকারি বা বেসরকারি হোমে। কিন্তু নেপালে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক স্তরে খুব বেগ পেতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে জলপাইগুড়িতে সরকারি কোরক হোমে নেপালের বেশ কয়েকজন কিশোর আবাসিক রয়েছে। এদিকে আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স এলাকা থেকে কাজের অজুহাতে নিয়ে গিয়ে অনেক কিশোর-কিশোরীকে আরব দেশে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন এজেন্ট বা এজেন্সি কাজ দেওয়ার টোপ দিয়ে এই ধরনের পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। মূলত চা বাগান এলাকা থেকেই বেশি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আরব দুনিয়ায়।
শিলিগুড়ি থেকে নেপাল সীমান্ত (Nepal Border) দিয়ে আরবে পাচার হচ্ছে অনেক নারী ও শিশুও। পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে বা পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে ভারতে আসার পর অনেক কিশোরকে শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস, কখনও এনজেপি (NJP) থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে। ভারত-নেপাল সীমান্তে এসএসবির (SSB) ভিজিলেন্সকে (Vigilance) আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। দুই দেশের পার্শ্ববর্তী ভারতীয় জেলা ও নেপালের জেলা পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় খুব দরকার। এই সব বিষয়ে বিস্তারিত আলাচনা করতে রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স আসছে জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ির জেলা শাসক শামা পারভিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাজ্য টাস্ক ফোর্সের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে আমার অফিসে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ ও প্রশাসন, এনজিও এবং টাস্ক ফোর্সের (Task Force) আধিকারিকরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।’