তুফানগঞ্জঃ দারিদ্রের ছোঁয়া সর্বত্র, নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জোগাড়। এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দারিদ্রতাকে সঙ্গী করে নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের দেওচড়াইয়ের বাসিন্দা স্বরূপ সরকার। এবছর তিনি আদায় করে নিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত গোটা গ্রাম।
দেওচড়াই হাই স্কুলে ক্যান্টিন চালিয়ে সংসার চলে স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ চন্দ্র সরকারের। পাশাপাশি তিনি অতিরিক্ত আয়ের জন্য সন্ধ্যার পর চপ সিঙ্গারা বিক্রি করেন তিনি। গোপালবাবুর এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্ত্রী রিক্তা সরকার ও তাঁর একমাত্র ছেলে স্বরূপ সরকার। ছেলে স্বরূপ যথেষ্টই মেধাবী। তাঁকে নিয়ে গোপালবাবু ও রিক্তা দেবীর অনেক স্বপ্ন। তারা চান ছেলে ডাক্তার হয়ে তাদের ও গ্রামের নাম উজ্জ্বল করুক। বাবা মায়ের স্বপ্নপূরণে নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন স্বরূপ। তিন বারের চেষ্টায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেলেন স্বরূপ।
জানা গিয়েছে, দেওচড়াই হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে স্বরূপ সরকার। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন কোচবিহার জেনকিনস স্কুল থেকে। পরবর্তীতে সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় বসে সে। তিন বারের চেষ্টায় এবার নিটে ২৯,৫৪৫ সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক করে। রাজ্য স্তরে তার র্যাঙ্ক হয় ১৬৪৩। এই র্যাঙ্ক হওয়ার সুবাদে সে কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পেয়ে যান।
ছেলের সাফল্যে খুশি স্বরুপের পরিবার। বাবা গণেশ চন্দ্র সরকার এবং মা রিক্তা সরকার বলেন, ‘ছেলের সাফল্যে আমরা যথেষ্ট খুশি। আমাদের পরিশ্রম করা স্বার্থক। আমরা আশাবাদী যে ছেলে আগামী দিনে দেওচড়াই এর প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার হয়ে ফিরবে। স্বরুপের ঠাকুমা বীণাপাণি সরকার বলেন, ‘আমরা তেমন পড়া শিখতে পারিনি। স্বরূপের ঠাকুরদারও ইচ্ছে ছিল নাতি ডাক্তার হোক। স্বরূপ আমাদের ইচ্ছে পূরণ করেছে।’