কোচবিহার: ভোটের জন্য রাস্তা থেকে প্রায় সিংহভাগ যানবাহন তুলে নেওয়া হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে চলেছেন নিত্যযাত্রীরা। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এনবিএসটিসি)-র পরিষেবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ তাদের হাতে থাকা বাসের ৭০ শতাংশ চলে যাচ্ছে ভোটের কাজে। বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ছোট সবধরনের গাড়িও ভোটের কাজে যাচ্ছে। ভোটের জন্য ভিনরাজ্য থেকেও বাস আসছে কোচবিহারে। শুক্রবার থেকেই জেলায় ধীরে ধীরে যানবাহন কমার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। কোচবিহারে সম্পূর্ণ ভোট প্রক্রিয়ার জন্য সবমিলিয়ে চার হাজার গাড়ি প্রয়োজন।
এনবিএসটিসি সূত্রে খবর, তাদের কাছে সবমিলিয়ে ৭০০ বাস রয়েছে। তারমধ্যে গড়ে ৬০টি বাস নিত্যদিন মেরামতির কাজে থাকে। বাকি ৬৪০টি বাসের মধ্যে ২০০টি বাস কেন্দ্রীয় বাহিনী ও অন্যান্য ফোর্সের জন্য দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫০টি বাস দিয়েও দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৫০টি বাস শুক্রবার দেওয়া হবে। প্রথম দফার ভোটগ্রহণের সময় এগুলি কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি সব জেলাতেই মিলেমিশে ব্যবহার হবে। প্রথম দফার ভোট মিটলে উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাতেও এনবিএসটিসির এই বাসগুলি যাবে। সেইসঙ্গে ভোটকর্মীদের জন্য ২৫০টি বাস দিচ্ছে এই সংস্থা।
১৭ এপ্রিল এই বাসগুলো প্রশাসন নেবে। ভোট মেটার পর বেসরকাররি বাস, ছোট গাড়িগুলির ফের রাস্তায় নামতে ২১ এপ্রিল হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর। অন্যদিকে, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে ২০৪৩টি বুথে ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৩৮৫টি বিভিন্ন ধরনের গাড়ি লাগবে। এরমধ্যে ৩৫০টি বাস লাগবে। এর জন্য জেলার বাস তো নেওয়া হচ্ছে। আবার অসম থেকে ১৩০টি বাস ভাড়া করে আনা হবে। ১৭ তারিখ থেকে এই গাড়িগুলো রাস্তায় থাকবে না। জেলা পুলিশ ফোর্সের জন্য সবমিলিয়ে প্রায় দু’হাজার গাড়ি নেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে বেসরকারি ও সরকারি গাড়ি রয়েছে।
এদিকে রাস্তায় যানবাহন কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই সমস্যা শুরু হয়েছে। সেই সমস্যা আগামী সপ্তাহ থেকে আরও বাড়বে বলে ধারণা যাত্রীদের। কোচবিহারের দীপক সরকার ব্যবসার কাজে নিত্যদিন ফালাকাট, ধূপগুড়ি যান। তাঁর কথায়, ‘প্রতিবারই ভোটের সময় সকালে বাস পেতে সমস্যা হয়। ফেরার সময় আরও সমস্যা বাড়ে। কোনওবার এমনও হয়েছে ছোট গাড়ি ভাড়া করেও আসতে হয়েছে। কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি, মারুগঞ্জ থেকে সবিতা বর্মন, কমলা সরকাররা প্রতিদিন কোচবিহারে কাজে আসেন। তাঁরা কেউ ছোট শিশুদের দেখভাল করেন, কেউ আবার কয়েক বাড়ি ঘুরে রান্নার কাজ করেন। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের আগে ও পরে কীভাবে কাজে আসব সেটাই ভাবছি। প্রতিদিন তো ছোট অটোতে করে আসি। সেগুলো ভোটের জন্য নেওয়া হয়েছে বলে চালক জানিয়ে দিয়েছেন।