অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: প্রায় দশ মাস পর ভিজিটরের টিকিটে হাসপাতালে ঢুকছেন আয়ারা। ওই টিকিট দেওয়া হয় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর বাড়ির লোকদের। রোগীর বাড়ির লোক হিসেবে রোগীর দেখভাল করে আবার বেরিয়ে আসছেন আয়ারা। হাসপাতাল সুপার ডাঃ পরিতোষ মণ্ডল বলেন, ‘নিয়ম করে আয়াদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। তবে আয়া না থাকলেও হাসপাতালে যে পরিকাঠামো ছিল সেটা দিয়েই এই কয়েকমাস কোনও সমস্যা হয়নি।’
বিভিন্ন সময়ে রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগে দশ মাস আগে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আয়াদের ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। এরপর বিভিন্ন জায়গায় দরবার করার পর আন্দোলনে নামেন কাজ হারানো আয়ারা। আন্দোলন হলেও আয়াদের হাসপাতালে ঢোকা নিয়ে কড়া মনভাবেই ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আয়াদের ঢোকা বন্ধ থাকায় অনেক রোগীর বাড়ির লোকদের সমস্যা হচ্ছিল। রোগীকে দেখভালের ক্ষেত্রে তাঁরা সমস্যায় পড়েছিলেন। আয়াদের আন্দোলেনের পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠছিল।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়ারা রোগীর পরিজন হিসেবে হাসপাতালে থাকতে পারেন। বর্তমানে অন্তত ৩০-৩৫ জন আয়া কাজ করছেন। তাঁদের কাজের উপর নজর রাখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কল্পনা রায় নামে জেলা হাসপাতালের কাজে থাকা এক আয়ার কথায়, ‘কয়েক মাস কাজ না থাকায় আমরা সমস্যায় ছিলাম। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল। আবার কাজ ফিরে পাওয়ায় ভালো লাগছে।’
আয়ারা বর্তমানে শুধু মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার ইউনিটে রয়েছেন। একজন আয়া একজন রোগীরই দেখভাল করছেন। ১২ ঘণ্টা থাকার জন্য তাঁরা ৩০০ টাকা করে নিচ্ছেন। যশোডাঙ্গা থেকে আসা এক রোগীর বাবা প্রদীপ বর্মন বলেন, ‘আমার স্ত্রী বাইরে আছেন। মেয়ে সাধারণ বিভাগে ভর্তি। ওখানে তো ছেলেদের রাতে থাকতে দেয় না। তাই একজন আয়া রেখেছি। নাহলে তো কেউ থাকার নেই।’