ময়নাগুড়ি: জঙ্গলে হাই অ্যালার্ট জারি করল বন দপ্তর। শুধু জঙ্গলই নয়, নজরদারির তালিকায় আনা হল একাধিক বনবস্তিকেও। গরুমারা এবং জলপাইগুড়ির আওতাধীন ময়নাগুড়ি ব্লকের বুধুরাম, কালীপুর, চাটুয়া, কালামাটি, চ্যাংমারি বনবস্তি সহ পার্শ্ববর্তী জঙ্গল ঘেঁষা এলাকাগুলির নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করল বন দপ্তর।
গরুমারার পাশাপাশি জলঢাকা, মূর্তি, ডায়না নদীর সুদীর্ঘ পথ ও নদী লাগোয়া বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, ঘাসবনজুড়ে শুরু হয়েছে বন দপ্তরের নজরদারি। হেঁটে নজরদারির পাশাপাশি কুনকি হাতি এবং উঁচু ওয়াচটাওয়ারের থেকে নজরদারি শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলের পথে চলছে নাকা চেকিং।
সম্প্রতি অসমের চোরাশিকারিদের হাতে একটি গন্ডারের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে৷ এরপরই গরুমারা জঙ্গলের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। গন্ডার সুরক্ষায় কোনওভাবেই নিরাপত্তার খামতি রাখতে নারাজ বন দপ্তর। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গরুমারা দক্ষিণ রেঞ্জের বনকর্মীরা জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি বনবস্তিগুলিতে নজরদারি শুরু করে। প্রতিটি বনবস্তি ঘুরে দেখেন ওই রেঞ্জের আধিকারিক সহ কর্মীরা। গরুমারা দক্ষিণের রেঞ্জ অফিসার সুদীপ দে বলেন, ‘জঙ্গলের ভিতরে নজরদারি চালানোর সঙ্গে প্রতিটি বনবস্তিকে এবার নজরদারির আওতায় রাখা হচ্ছে। দিন-রাত সবসময় বনকর্মীরা টলদারি চালাচ্ছেন। দিনের পাশাপাশি রাতে প্রতিনিয়ত গরুমারা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকাজুড়ে নজরদারি চলছে।’
উল্লেখ্য, ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাইতে আগেও হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছিল। এবার নতুন করে গরুমারায়ায় হাই অ্যালার্ট জারির পর রামশাইয়ের নিরাপত্তাও আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। জঙ্গল ঘেঁষা বনবস্তিতে আশ্রয় নিয়ে কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার আবেদন জানান বনকর্মীরা। বন দপ্তরের পাশাপাশি পুলিশও নজরদারি চালাচ্ছে। গরুমারা দক্ষিণ রেঞ্জের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি বন বিভাগের রামশাই রেঞ্জের বনাঞ্চলেও নজরদারি অব্যাহত। পাশাপাশি সন্দেহভাজন কাউকে দেখামাত্রই চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। কাজে লাগানো হচ্ছে স্নিফার ডগও। অতীতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গলে চোরাশিকারিদের আনাগোনা সামনে এসেছিল। গরুমারা, নাথুয়া জঙ্গল ঘেঁষা জলঢাকার ঘাসবনে শিকারিদের উপস্থিতি জানা গিয়েছিল। কয়েকজন শিকারিকে আটকও করা হয়েছিল। তাই নদী সংলগ্ন এলাকাকে নজরদারির আওতাভুক্ত করে বন দপ্তর নজরমিনার থেকে নজরদারি চালাচ্ছে। রামশাইতে জলঢাকার বাঁধের ওপরেও ক্যাম্প চালু করেছে বন দপ্তর। সেখানে দিন-রাত বনকর্মীরা থাকছেন।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও তথা গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিকাশ ভি বলেন, ‘নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই জঙ্গল সহ লাগোয়া এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা। জারি হয়েছে কড়া সতর্কতা।’