নিউজ ব্যুরো: এগিয়ে নিয়ে আসা হল এবছরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় (WBBSE Board Exam)। দুটি পরীক্ষাই শুরু হবে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে। বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ও মাদ্রাসা বোর্ডের বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরীক্ষার দিনক্ষণ একই থাকছে। সময় বদলের কারণ জানা যায়নি। এই সিদ্ধান্তে উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার পরীক্ষার্থীদের সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানো নিয়ে ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নতুন সময়ে শুরু হওয়ায় এবছর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং হাই মাদ্রাসার আলিম ও ফাজিল পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ১টায়। সূত্রের খবর, যেসব পরীক্ষার্থী দূর থেকে আসে, দেরিতে পরীক্ষা শেষ হলে তাদের বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যায়। সেই সমস্যা মেটাতেই এই সময় এগিয়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত। তবে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এইভাবে সময় পরিবর্তনের ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে।’
আলিপুরদুয়ার জেলার হাতিপোঁতার পরীক্ষার্থী শিউলি সূত্রধরের কথাই ধরা যাক। প্রতিবছর তাদের স্কুলের পরীক্ষার সিট পড়ে ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের কোনও স্কুলে। শিউলির কথায়, ‘এবার সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্র পৌঁছাতে হলে আমাদের সকাল সাড়ে ৬টায় বাড়ি থেকে বের হতে হবে।’ ওই জেলারই লোকনাথপুর হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের গত বছর মহাকালগুড়ি মিশন হাইস্কুলে পরীক্ষার সিট পড়েছিল। ওই স্কুলের অনেক পরীক্ষার্থীর বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগে। তাহলে এবার ওই পরীক্ষার্থীদের সকাল ৭টার আগে বাড়ি থেকে বের হতে হবে।
কোচবিহার জেলার ফলিমারি নেহরু বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের সিট পড়ে বক্সিরহাট গার্লস হাইস্কুলে। দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। পার হতে হয় দুটি নদী। রায়ডাক ও সংকোশ। কত সকালে তাদের রওনা দিতে হবে, ভেবেই পাচ্ছে না পড়ুয়ারা। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা ছেত্রীও উদ্বিগ্ন। জানালেন, এবার এই স্কুল থেকে ৩৭ জন মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। সেখানকার বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব অনেকটা বেশি। নদী পার হতেই তো অনেকটা সময় চলে যায়। আবার রাস্তাঘাটও বেহাল।
জলপাইগুড়ি জেলার ষোলোঘরিয়া বনবস্তি থেকে ক্রান্তি দেবীঝোরা হাইস্কুলের দূরত্ব কম করে ১২ কিলোমিটার। পরীক্ষা দেওয়া তো পরের কথা, সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোটাই তাদের কাছে যেন অগ্নিপরীক্ষা।