নাগরাকাটাঃ চিতাবাঘ কিংবা হাতি। ডুয়ার্সে চা বাগান ও জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বুনোদের হানাদারি (wildlife-human conflict) প্রতি বছরই বেড়ে যায় শীতকালে (Winter)। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোথাও শুকনো ডালপালা কুড়োতে গিয়ে হাতির হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। আবার চা বাগানে কর্মরত অবস্থায় চিতাবাঘের অতর্কিত হামলায় শ্রমিক জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। মানুষ ও বন্যপ্রাণের এই ধরনের সংঘাত রুখতে সচেতনতার প্রসারে নেমেছে বন দপ্তরের খুনিয়া রেঞ্জ। বন্যপ্রাণ উপদ্রুত এলাকাগুলিতে গিয়ে ওই রেঞ্জের পক্ষ থেকে এখন স্থানীয়দের সঙ্গে শিবির আয়োজনের কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার এই ধরনের শিবির হয়েছে গোটা ডুয়ার্সের অন্যতম হাতি উপদ্রুত এলাকা নাগরাকাটার বামনডাঙা চা বাগানের বিছ লাইনের একটি শ্রমিক মহল্লায়। এদিনই চিতাবাঘ উপদ্রুত বাগান ভগতপুরে গিয়েও সেখানকার শ্রমিকদের নিরাপদে থাকতে করণীয় বিষয়ের ওপর বার্তা দেয় খুনিয়া রেঞ্জ। রেঞ্জার সজল দে বলেন, এই ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শিবিরে আমাদের পরামর্শ প্রদান তো রয়েইছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের অভিজ্ঞতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এপর্যন্ত খুনিয়া রেঞ্জের পক্ষ থেকে এখনও মোট ৬ টি এমন শিবির হয়েছে। এর আগে মেটেলি ব্লকের বাতাবাড়ি চা বাগান, বড়দিঘি চা বাগান ও কিলকোট চা বাগানের দুটি স্থানে শিবির হয়েছে। রেঞ্জার বলেন, মেটেলির মঙ্গলবাড়ি ও ইনডং বস্তী, নাগরাকাটা ব্লকের হোপ ও হিলা-র মত চা বাগানগুলিতেও শিবির আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। বাসিন্দাদের পাশাপাশি বন্যপ্রাণও যাতে সুরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে প্রত্যেকের কি করণীয় তা বুঝিয়ে বলা হচ্ছে।
বন দপ্তরের হিসেব বলছে গত অক্টোবর থেকে এপর্যন্ত শুধু নাগরাকাটা ব্লকে হাতির হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৮ জন। মেটেলি ব্লকের ক্ষেত্রে ওই সংখ্যাটি ৪। কোথাও লোকালয়ে আবার কোথাও জঙ্গলের ভেতর ওই সমস্ত প্রাণহানির ঘটনাগুলি ঘটে। চিতাবাঘের হামলায় জখম হওয়ার সংখ্যাও একাধিক। যে কারনে এই মরসুমে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার উপায়ের মধ্যে জঙ্গলের ভেতরে প্রবেশ না করা, চা বাগানে দল বেঁধে কাজে যাওয়া, হাতি আসে এমন এলাকায় ভোর বেলায় বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, বাড়ির বয়স্কদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নজরদারির মধ্যে রাখা এসব বিষয়ের কথা শিবিরে তুলে ধরা হচ্ছে।