মেখলিগঞ্জ: জয়ী সেতু তৈরির কৃতিত্ব কার এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। সোমবার শিলিগুড়ি বাঘাযতীন পার্ক থেকে দূর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে মেখলিগঞ্জ মহকুমার দুই ব্লক মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মাঝে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত জয়ী সেতুর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জয়ী সেতুর উদ্বোধনের আগেই এই সেতু তৈরির কৃতিত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের না বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই বির্তকে জড়িয়েছেন মেখলিগঞ্জ পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির নেতাকর্মীরা।
রবিবার সন্ধ্যা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘতম জয়ী সেতু তৈরি হয়েছে এবং এই সেতু তৈরির মাধ্যমে হলদিবাড়ি থেকে মেখলিগঞ্জে যাতায়াতের সুবিধা করে দেবার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে দেখা যায় বিজেপির মেখলিগঞ্জ শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি রাজীব সিংহ সরকার, বিজেপির মেখলিগঞ্জ শহর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশেকার রহমান সহ বিজেপি নেতা কর্মীদের। পিছিয়ে থাকেনি তৃণমূল কংগ্রেসও। মেখলিগঞ্জ বিধানসভা ক্ষেত্রের মানুষের দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে জয়ী সেতুর নির্মাণ হয়েছে তাই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন মেখলিগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি বিষ্ণুপদ ঘোষ সহ প্রমুখ। এছাড়াও জয়ী সেতু ও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে জয়ী সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সকলের উপস্থিতি কামনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন যুব নেতা আনারুল মহম্মদ।

রবিবার থেকে অনেক ক্ষেত্রে এই সব পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পর পরস্পরের সাথে বিতর্কে জড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। তৃণমূল কংগ্রেসের মেখলিগঞ্জ শহর সহ-সভাপতি বিষ্ণুপদ ঘোষ বলেন, ‘মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির ব্লক তিস্তা নদী দ্বারা বিভক্ত হয়ে আছে। যার ফলে মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মানুষদের প্রায় ৮০ কিমি পথ ঘুরে আসা যাওয়া করতে হত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে জয়ী সেতু নির্মাণ হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপি সেতুর কৃতিত্ব নিয়ে নির্বাচনি চমক দিতে চাইছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে এই সেতু তৈরির দাবি থাকা সত্ত্বেও কেউ পূরণ করেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দাবি পূরণ করেছেন। তাই তাকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মেখলিগঞ্জ মহকুমার মানুষদের তরফে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।’

অন্যদিকে, বিজেপির মেখলিগঞ্জ শহর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশেকার রহমান বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি দীর্ঘদিন ধরে মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ির মাঝে তিস্তা নদীর ওপর সেতুর দাবি করে আসছিল কিন্তু এই রাজ্যে তাদের সরকার ক্ষমতায় না থাকায় এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়ে ওঠেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছিটমহল বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত করার সময় যারা ওপার বাংলা থেকে ভারতে আসছে তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে এক মোটা অঙ্কের আর্থিক প্যাকেজ দেয় এবং কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা তুলে দেয় তিস্তা সেতু নির্মাণের জন্য। মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনুপ্রেরণায় কোনো কিছু তৈরি করা যায় না। তারজন্য অর্থের প্রয়োজন যা এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার বরাদ্দ করেছে। তাই এই সেতু তৈরির কৃতিত্ব কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের।’