নাগরাকাটাঃ একদিকে চিতাবাঘ, অন্যদিকে হাতি। ওই দুই বুনোর হামলায় জখম হলেন মোট ৩ জন। চিতাবাঘের সঙ্গে তো রীতিমতো মল্লযুদ্ধ বেঁধে যায় এক চা শ্রমিকের। তাঁকে বাঁচাতে ছুটে এলে জন্তুটির হামলায় জখম হন আরেক শ্রমিক। অন্য দিকে একটি দলছুট দাঁতালের চোখা দাঁতে আহত হন এক কৃষক। চিতাবাঘের ঘটনাটি সোমবার বিকেলে নাগরাকাটার(Nagrakata) গাঠিয়া চা বাগানের। অন্যদিকে হাতির হামলার ঘটনাটি ঘটে সোমবার গভীর রাতের হৃদয়পুর বস্তীতে।
বন দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গেছে গাঠিয়াতে একটি জল নিকাশী নালায় কাজ করছিলেন লক্ষ্মী ওরাওঁ নামে এক মহিলা শ্রমিক। হঠাৎ পেছন থেকে একটি চিতাবাঘ তাঁর ওপর আক্রমণ করে বসে। নিজেকে বুনোটির খপ্পর থেকে বাঁচাতে লক্ষ্মী প্রাণপণ লড়াই শুরু করে দেয়। কয়েক মিনিট ধরে ওই ধ্বস্তাধস্তি চলে। ওই দৃশ্য দেখে পাশেই কর্মরত শুভম ওরাওঁ নামে এক শ্রমিক মহিলাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলে চিতাবাঘটি তাঁর ওপর আক্রমণ করে বসে। পরে অন্য শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে জন্তুটি চা বাগানের ঝোঁপে ঢুকে পড়ে। তাঁদের পিঠে, গালে ও মুখে চিতাবাঘটি থাবা বসয়ে দেয়। আহত দুজনকে উদ্ধার করে সুলকাপাড়া গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বর্তমানে দুজনেই বাগানের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুই জখমেরি বাড়ি বাগানের মাতু লাইনে। গাঠিয়ার ম্যানেজার নবীন মিশ্র বলেন, বন দপ্তরকে খাঁচা পাতার আবেদন করা হয়েছে।
অন্যদিকে হৃদয়পুর বস্তীতে হাতির দাঁতে যে ব্যক্তি জখম হন তাঁর নাম সেলুকাস ওরাওঁ। সোমবার গভীর রাতে একটি দলছুট দাঁতাল ওই গ্রামে ঢুকলে তিনি হাতিটির সামনে পড়ে যান। বরাত জোরে প্রাণে বাঁচলেও তাঁর কাঁধের নীচে গভীর ক্ষতর সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে তিনি মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বন দপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল দেবনাথ বলেন, চিতাবাঘ থেকে সুরক্ষিত থাকতে চা বাগানের শ্রমিকদের দল বেঁধে কাজে যাওয়া ও সেই সাথে বাগানের ভেতর ঢোকার আগে আশপাশ দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার রেঞ্জার শুভাশিস রায় বলেন, হাতির গতিবিধির প্রতি সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে আংরাভাসা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ছেত্রী বলেন, গোটা তল্লাট হাতি উপদ্রুত। প্রাণ হাতে করে বাসিন্দারা রাত কাটাচ্ছেন। হাতি তাড়াতে বন দপ্তরের ভূমিকায় কেউই সন্তুষ্ট নন।