দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ : দূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রশাসনের প্রচারই যে সার তা রায়গঞ্জের কুলিক নদীর দুই ঘাটে প্রত্যক্ষ করা যাবে। সাধারণ মানুষ পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে যে এখনও পুরোপুরিভাবে সচেতন হয়নি তা পরিবেশবিদদের কথায় ফুটে উঠেছে। দুর্গাপুজোর পর প্রতিবছর সরস্বতীপুজোতেও শহরের নদীঘাটগুলিতে দূষণ ছড়ায়। বাড়ির প্রতিমাগুলির পাশাপাশি ক্লাবের প্রতিমাগুলিও নিয়ম না মেনেই নদীতে বিসর্জন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকালে নদীঘাটে গিয়ে দেখা গেল জলে পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো, বাঁশ, খড়, সাজের কাপড় এবং শোলার সামগ্রী। যা থেকে দূষিত হচ্ছে কুলিক নদী। রায়গঞ্জ পুরসভার দাবি, লেবার লাগিয়ে একবার পরিষ্কার করা হলেও আবার নোংরা করে ফেলা হয়েছে। এজন্য একাংশ বাসিন্দাই দায়ী। পরিবেশবিদরা প্রতিমার কাঠামো ও আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কার করে দূষণের হাত থেকে কুলিক নদীকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পরিবেশবিদ চন্দ্রনারায়ণ সাহা জানান, কিছু অসচেতন মানুষ কুলিক নদীতে দূষণ ছড়াচ্ছে। দুর্গাপুজোর সময় পুরসভা প্রতিমা বিসর্জনে যে উদ্যোগ নিয়ে থাকে সরস্বতী ও কালীপুজোতেও সেই উদ্যোগ নিলে ভালো হয়। যে সমস্ত পুজো কমিটি বা বাড়ির পুজো নিয়ম মেনে বিসর্জন দেবে না তাদের জরিমানা করা উচিত। সরস্বতীপুজোর প্রতিমা এবং অন্য সরঞ্জাম নদীতে ফেলে নদীর জল দূষিত করে তুলেছে। পরিবেশবিদ কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, পুরসভার উচিত আগামীতে কুলিক নদীর দূষণ রোধে কঠোর পদক্ষেপ করা। আপাতত নদী বক্ষ থেকে প্রতিমার কাঠামো ও আবর্জনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরিয়ে ফেলে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে হবে।
বন্দর শ্মশানঘাটের ইনচার্জ বৈদ্যনাথ ঘোষ বলেন, রাতে যারা বিসর্জন দিয়েছে তারাই নদীর মধ্যে প্রতিমার কাঠামো এবং আবর্জনা ফেলে রেখে পালিয়েছে। আমরা দুদিনের মধ্যে পরিষ্কার করে দেব। বন্দর শ্মশানঘাট এলাকার কাউন্সিলার তপন দাস নদী ঘাট অপরিষ্কারের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, শীঘ্রই শ্রমিক লাগিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। রায়গঞ্জ পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার সাধন বর্মন বলেন, আমরা একবার নদীঘাটগুলি পরিষ্কার করেছি। কিন্তু আবার অপরিচ্ছন্ন করে তোলা হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে ঘাটগুলির। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদীঘাটে পাহারাদার না থাকায় এক শ্রেণির মানুষ কুলিক নদীকে দূষিত করে তুলছে।