কোচবিহার: এতদিন তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় সহ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। এবার সরাসরি দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। গত কয়েক ঘন্টায় সোশ্যাল মিডিযায় নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে দুটি পোস্ট করেন মিহিরবাবু।
সেখানে তিনি এক জায়গায় লিখেছেন, গত দশ বছরে শাসন ক্ষমতা ভোগ করার সময়ে দিদিকে ঘিরে যে পারিষদ বলয় তৈরী হয়েছিল তাঁর থেকে সামাজিক দূরত্ব রেখে গিয়েছি বরাবর। তবু গত দশ বছরে দলের মধ্যে অপমানিত হয়েছি অগুনতিবার। কিন্তু তাই বলে দিদির উপর আস্থা হারাইনি। আজ যখন দেখছি দিদির দলে কোন ঠিকাদার থিংকট্যাঙ্ক কোম্পানি ঢুকে পরে তছনছ করে দিচ্ছে ঘরবাড়ি, অপমানিত জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অথচ দিদি অন্তরালে নির্বিকার। তাহলে সেই ঘরবাড়ির মতই দিদির প্রতি এতদিনের সব আস্থা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়?
অন্যদিকে, নির্বাচনের আগে দলের একজন বর্ষীয়ান বিধায়ক খোদ দলনেত্রীর বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ তোলায় বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে গত ৩ অক্টোবরই দলের সমস্ত রকম সাংগঠনিক পদ থেকে নিজের অব্যাহতি ঘোষণা করেছিলেন। এরপর থেকে তিনি দলের সঙ্গে আর কোনরকম যোগাযোগ রাখছেন না। তা নিযে বেশ কিছুদিন ধরেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে মিহির গোস্বামী অন্য কোন দলে যাচ্ছেন কিনা।
অন্যদিকে, এই অবস্থায় সম্প্রতি বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামানিক বিজয়া করতে মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে একান্তে ঘন্টাখানেকের বেশি বৈঠক করেন। এরপর থেকে মিহিরের দলবদলের গুঞ্জন আরও কয়েকগুন বেড়ে যায়। সম্প্রতি দলের জেলার দুই মন্ত্রী তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত যান। কিন্তু তবুও মিহিরের সঙ্গে তাঁরা দেখা করতে পারেন না। এরপর থেকে প্রায় সবসময়ই তাঁর ফোন সুইচ অফ থাকছে। তিনি বর্তমানে কোথায় রয়েছেন সে খবরও দলের কেই জানে না।
এই অবস্থায় গত কয়েক ঘন্টায় খোদ দলনেত্রীকে নিশানা করে মিহিরের এ ধরণের পোস্টকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের মতে এই পোস্টের মাধ্যমে মিহিরবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর তৃণমূলে থাকছেন না।