রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) কথা মাথায় রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) ব্রিগেড জনসভা এড়াচ্ছেন অনীত থাপা (Anit Thapa)। এর আগে তৃণমূলের একাধিক সমাবেশে অনীতকে দেখা গিয়েছে। মূল মঞ্চে উঠে তিনি ভাষণও দিয়েছেন। কিন্তু সামনে লোকসভা ভোট থাকায় পাহাড়ের আবেগের কথা মাথায় রেখে তিনি তৃণমূলের সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে এসে অনীত বলেন, ‘ব্রিগেডে তৃণমূলের জনসভা হচ্ছে। আমি তো তৃণমূল করি না। আমাদের দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম)। তাই ব্রিগেডে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, পাহাড়ের মানুষ সিপিএম, তৃণমূলের মতো রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে সন্তুষ্ট নন।
পাহাড়ের মানুষ মনে করেন, সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলি গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে কোনওদিন মান্যতা দেবে না। এই রাজনৈতিক দলগুলি পাহাড়ের উন্নয়নে সেভাবে কাজ করেনি বলেই আজ পাহাড়ের এই পরিণতি, এই ধারণা তাঁদের রয়েছে। আর তাই সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সরাসরি জোটের কথা পাহাড়ের কোনও রাজনৈতিক দলই বলতে চায় না।
২০১৭ সাল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছেন অনীত থাপা। ২০১৮ সালে তৃণমূলের ২১ জুলাই ব্রিগেডে অনীত থাপা এবং বিনয় তামাং অংশ নিয়েছিলেন। প্রথমদিকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং পরবর্তীতে সেই দল ছেড়ে ২০২১ সালে বিজিপিএম তৈরি করেন অনীত। তার পরেও প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে অনীতকে দেখা গিয়েছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েই পাহাড়ের উন্নয়নে কাজ করার কথা প্রথম দিন থেকেই বলছেন অনীত। কিন্তু পাহাড়ের কোনও জনসভায় জোরগলায় তৃণমূলের সঙ্গে জোটে থাকার কথা বলেন না বিজিপিএম নেতা-নেত্রীরা। গত জিটিএ এবং পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে আসন রফা করেছিল বিজিপিএম। কিন্তু পুরোটাই অত্যন্ত গোপনে হয়েছে। অনীতরা কখনোই তৃণমূলকে আসন ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি। কেননা তাঁরা ভালোভাবেই জানেন যে, রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে হাত মেলানোকে পাহাড়ের মানুষ ভালোভাবে নেবে না এবং এর প্রভাব ভোটবাক্সে পড়তে বাধ্য।
রবিবার ব্রিগেডে জনগর্জন সভার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। বিজিপিএম শরিক দলের এই সভায় অংশ নেবে, এমনটাই মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু লোকসভা ভোট দোরগোড়ায় থাকায় এবারের ব্রিগেড এড়াচ্ছেন অনীতরা। বৃহস্পতিবার দাগাপুরে শ্রমিক ভবন শিলান্যাস অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অনীত। রাজ্য সরকারের দেওয়া ১৪ কোটি ২৪ লক্ষ টাকায় ১০০ শয্যার এই শ্রমিক ভবন তৈরি হবে।
এখানেই অনীত সাংবাদিকদের স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তৃণমূলের সভায় তাঁরা যাচ্ছেন না। তৃণমূল-বিজিপিএম জোটের সম্ভাব্য প্রার্থী গোপাল লামা অবশ্য বলেছেন, ‘ব্রিগেডে যাওয়ার ব্যাপারে আমাকে অনীত কিছু বলেননি। আমাকে বলা হলে নিশ্চয়ই যাব।’