খড়িবাড়ি: অবৈধভাবে সরকারি জমি কেনাবেচা এবং নদীর ওপর বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করল খড়িবাড়ি পুলিশ। নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি থেকে বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের নাম সঞ্জিত বর্মন। বাড়ি পানিট্যাঙ্কির গৌড়সিং জোত এলাকায়। শুক্রবার ধৃত তৃণমূল নেতাকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি বাজারের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে বাতারিয়া নদী। নদীর চরে ঘেঁষে পানিট্যাঙ্কি-নকশালবাড়ি রাজ্য সড়কের পাশে পূর্ত দপ্তরের জায়গায় সারি বেঁধে তৈরি করা হয়েছে কয়েকশো দোকান ও বাড়ি। কেউ নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে আবার কেউ নদীর ওপর কংক্রিটের পিলার বানিয়ে নদীর গতিপথ আটকে দোকান কিংবা বসতবাড়ি তৈরি করেছে। নদীর এক তীরে পূর্ত দপ্তরের জমি আর অন্য তীরে রয়েছে পানিট্যাঙ্কির সতীশচন্দ্র চা বাগানের বিতর্কিত জমি। নদীর ওপর অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে রাজেন্দ্র গিরির পরিবারের বিরুদ্ধে। ওই গিরি পরিবারের নদীর এপারে পূর্তদপ্তরের জায়গায় রয়েছে দোকান, অন্য তীরে সতীশচন্দ্র চা বাগানের জমিতে রয়েছে বসতবাড়ি। গিরি পরিবার দোকান ও বসতবাড়ির মধ্যে যাতায়াতের জন্য নদীবক্ষের ওপর পিলার বানিয়ে কংক্রিটের ছাদ তৈরি করেছে বলে অভিযোগ। এই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ তুলে ২৯ এপ্রিল উত্তরবঙ্গ সংবাদে খবর প্রকাশিত হয়। খড়িবাড়ির বিডিও’র নির্দেশ তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গত মঙ্গলবার ৩ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাজেন্দ্র গিরির দুই ছেলে ধর্মেন্দ্র ও জিতেন্দ্র বাতারিয়া নদীর ওপর অবৈধ নির্মাণ করেছে। আর নাকশালবাড়ি রায়পাড়া খোকন ঘোষ পূর্ত দপ্তরের জমিটি ৬ লক্ষ টাকায় রাজেন্দ্র গিরির কাছে বিক্রি করে বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে খড়িবাড়ি পুলিশ অবৈধভাবে পূর্তদপ্তরের জমি বেচাকেনার অভিযোগে বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতা সঞ্জিত বর্মনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তৃণমূল নেতার কাছ থেকে ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকায় পূর্ত দপ্তরের ১৬৮ বর্গফুট জমি কিনেছিল নকশালবাড়ির অভিযুক্ত খোকন ঘোষ। বাতারিয়া নদীর উপর অবৈধ নির্মাণ ও সরকারি জমি অবৈধভাবে কেনাবেচার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে খড়িবাড়ি পুলিশ।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের খড়িবাড়ি ব্লক সভাপতি হিরন্ময় রায় জানান, পানিট্যাঙ্কিতে একাধিক জমি কেলেঙ্কারির ঘটনা রয়েছে। শুধু পূর্ত দপ্তরের সরকারি জমি নয়, সতীশচন্দ্র চা বাগানের লিজভুক্ত সরকারি জমিও অবৈধভাবে সিন্ডিকেট তৈরি করে বিক্রি করেছে জমি মাফিয়ারা। হিরন্ময়বাবু পানিট্যাঙ্কি এলাকার সমস্ত জমি কেলেঙ্কারির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেন। তিনি জানান, আইন আইনের পথে চলুক। সঞ্জিত বর্মন বর্তমানে দলের কোনও পোস্টে নেই। তাকে দল কোনওভাবে সহযোগিতা করবে না।