ডালখোলা: ডালখোলা পুরবোর্ডের কাটমানি কাজিয়া সামাল দিতে বৈঠক ডেকেছিল তৃণমূল। রবিবার সেই বৈঠকে বিদ্রোহী দুই কাউন্সিলারকে না ডাকা নিয়ে শহরে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে। এদিনের বৈঠকে দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং এলাকার বিধায়ক গৌতম পাল শামিল ছিলেন। আর ডাকা হয়নি ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার তথা উপপুরপ্রধান হাজি ফিরোজ এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তনয় দে-কে।
তাঁকে বৈঠকে না ডাকা নিয়ে তোপ দেগেছেন হাজি ফিরোজ। তিনি বলেন, ‘কাটমানির ৭৫ লক্ষ টাকা এখনও জমা হয়ে পড়ে আছে।’ তাঁর যুক্তি, আট মাস আগে সমস্যা মেটাতে শীর্ষ নেতৃত্ব উদ্যোগ নিলে এত কাণ্ডই হত না। আর তনয় বলেছেন, ‘এদিনের বৈঠকের বিষয়ে দলীয় নেতৃত্ব আমাকে কিছু জানায়নি। ফলে কিছু বলতে পারব না।’
কানাইয়ার কথায়, ‘বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলারদের সঙ্গে আলোচনা করে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে এদিনের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।’ আর ফিরোজের তোপ সহ এদিনকার বৈঠক নিয়ে প্রশ্নে গৌতমের জবাব, ‘আমি কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার জেলা সভাপতি বলবেন।’
গত কয়েক দিনে ডালখোলা পুরবোর্ডে তৃণমূলের অন্দরের একের পর এক কাজিয়ার খবর সামনে আসতেই তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়ে যায়। বিশেষ করে পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকার কাটমানি তোলার অভিযোগ তুলে ফিরোজ সরব হওয়ার পর পরিস্থিতি চরম আকার নেয়। দলের এক প্রভাবশালী নেতা তো বলেইছেন, ফিরোজকে দল থেকে সরিয়ে না দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেবে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এদিনের বৈঠকে ১৪ জন কাউন্সিলারকে ডাকা হয়েছিল। বাকি দুই কাউন্সিলারকে ডাকা হল না কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের ডালখোলা শহর সভাপতি গোপাল রায়ের সাফ জবাব, ‘যাঁরা দলের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে কুৎসা ছড়াচ্ছেন, তাঁদের বৈঠকে ডাকার প্রশ্ন নেই। শীর্ষ নেতৃত্ব বাকি কাউন্সিলারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দল নিশ্চয় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আর দলের বিরোধিতা নিয়ে ফিরোজের জবাব, ‘আমি দলের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। দলে যাঁরা দুর্নীতিতে যুক্ত তাঁদের নিয়ে মুখ খুলেছি।’ তাঁর কথায়, ‘বৈঠকে আমাকে ডাকা হয়নি। তবে জেলা নেতৃত্ব ভবিষ্যতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে ভালো। আর বহিষ্কার করে দেবে মনে করলেও সেটা তাদের ব্যাপার।’