ফেশ্যাবাড়িঃ বছর খানেক আগে বসতভিটে গিলেছে তোর্ষা (Torsha)। আবেদন করেও মেলেনি সরকারি ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা। সহায় সম্বলহীন পরিবার গুলির দিন কাটছে অনাদরে। তাদেরই একজন গৃহহীন প্রৌঢ় আমিন মিয়াঁ। মাথার উপরের ছাদ কেড়েছে তোর্ষা নদী। দিশাহীন ভাবে বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেও আশ্রয় হয়নি। বর্তমানে সস্ত্রীক আমিন মিয়াঁর ঠাঁই তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে? প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কোচবিহার সদর মহকুমা শাসক শেখ রাকিবুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি জানা নেই। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে আশ্বস্ত করেন তিনি।
ঘটনাটি কোচবিহার-২ ব্লকের মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তোর্ষা তীরবর্তী কালপানি চাঁপাগুড়ি এলাকার। গত বছর বর্ষায় তোর্ষার ভয়াবহ ভাঙনের কবলে একাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। সেসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রী সহ প্রশাসনের কর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। তারা প্রত্যেকে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। যার ফলে চলতি বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ভয়াবহ ভাঙনের জেরে প্রায় ১৫টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে।
অভিযোগ, তারপরও হেলদোল নেই প্রশাসনের। যার খেসারত দিতে হচ্ছে তোর্ষা তীরবর্তী দুস্থ পরিবার গুলিকে। তাদের মধ্যে অন্যতম আমিন মিয়াঁ। একরাশ ক্ষোভ নিয়ে এদিন জানালেন, গত বছর ঘরবাড়ি সহ শেষ সম্বলটুকু নদীতে চলে যাওয়ার পর বাঁধের উপর কোনমতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। গত ১৭ এপ্রিল রাতে বিধ্বংসী ঝড়ে সব ধুলিসাৎ হয়ে যায়। নতুন ঘর বানানোর সাধ্য নেই। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও জনপ্রতিনিধিরাই পার্টি অফিসে থাকতে দিয়েছেন। তার স্ত্রী আম্বিয়া বিবির কথায়, পরিবারের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানর দশা। সরকারি ভাতার টাকায় সংসার চলে। আগামী দিন কোথায়, কিভাবে কাটবে তা ভেবে কুল পাচ্ছি না। ক্ষতিপূরণের টাকা না মেলায় বিপাকে পড়েছি। একই কথা জানিয়েছেন ভাঙন কবলিত অন্য দুর্গতরা।
এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মধুপুর অঞ্চল সভাপতি মেঘনাথ রায় কথায়, দল মত নির্বিশেষে একটি বিপদগ্রস্থ পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। মানব পুজো সবচেয়ে বড় ধর্ম। স্থানীয় বাসিন্দা ও মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান যোগেশ বর্মন বলেন, খুবই অসহায় ভাবে কাটছে ওদের দিন। যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণের ও পরিবারটির পুনর্বাসনের বিষয়টি দেখা হচ্ছে।