সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট : রাতের অন্ধকারে সাফ হচ্ছে আত্রেয়ী নদীবাঁধের গাছ। এমনকি বাঁধ কেটে রাস্তা বানিয়ে বালি তোলার কাজ চলছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি হওয়ার কারণে ফের বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন চকভৃগু ডাকরা এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা এই অনিয়মের অভিযোগ সেচ দপ্তরে জানিয়েছেন। তবে প্রশাসনের তরফে এখনও কেউ কোনও পদক্ষেপ করেননি। ফলে বালি মাফিয়াদের আতঙ্কে প্রকাশ্যে কেউই বিরোধিতা করতেও সাহস পাচ্ছেন না। তবে সেচ দপ্তরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে,ঘটনা খতিয়ে দেখে পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালুরঘাট শহরের পশ্চিমপাড়ে রয়েছে চকভৃগু। বালুরঘাট শহরের দিকে কংক্রিটের বাঁধ থাকলেও চকভৃগুর দিকে মাটির এবং তুলনামূলক কম উচ্চতার বাঁধ রয়েছে। প্রতিবছরই আত্রেয়ী নদীর জল ঢুকে পড়ে এই এলাকাগুলিতে। ফলে প্লাবিত হয় ওই এলাকা। এলাকার মানুষজনকে বানভাসি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যেই ডাকরা এলাকায় বাঁধের গাছ কেটে রাস্তা বানিয়ে চলছে বালি তোলার কাজ। এমন কর্মকাণ্ডে আগামীদিনে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে অবৈধভাবে বালি তোলার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ প্রকাশ্যে আন্দোলনে নামতে সাহস পাচ্ছেন না। তবে বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় স্লুইস গেট তৈরি করে বাঁধ মেরামত করা হলে এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি মিলতে পারে। তবে সেচ দপ্তরে লিখিত অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকার নদীবাঁধ কেটেই রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। নদী থেকে তোলা বালি এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে বলে অভিযোগ। এমনকি রাস্তার ওপরে যে গাছগুলি থাকছে, সেগুলিও কেটে ফেলা হচ্ছে। শুধু এলাকাতেই নয়, আত্রেয়ী বাঁধের বিভিন্ন এলাকাতেই এভাবে গাছ কাটা এবং রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। তবে বালি ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, তাঁরা রাজস্ব দিয়ে এই বালি তোলার কাজ করছেন। বাঁধ কাটা হয়নি এবং কোথাও গাছও কাটা হয়নি। বেআইনি এই কাজ কে বা কারা করছে, তা তাঁদের জানা নেই। জেলা সেচ দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার স্বপন বিশ্বাস বলেন, কেউ বাঁধকে ব্যবহার করতেই পারে। তবে এক্ষেত্রে সেচ দপ্তর থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে। ডাকরা এলাকায় কী ঘটেছে, তা তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।