গাজোলঃ “দিদির সুরক্ষা কবচ” কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এদিন ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল গাজোলের(Gazole) বাবুপুরে। দিদির দূত হয়ে বাবুপুরে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ অন্যান্যদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন বাবুপুর অঞ্চল চেয়ারম্যান সহ তৃণমূলের একাংশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। যদিও পরে তৃণমূল নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে। পরে শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয় দিদির সুরক্ষা কবচ এবং তৃণমূলের কর্মীসভা। ঘটনায় বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। যদিও বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের দাবি বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সহ অন্যান্যদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। আগামী দিনেও তাদের এই প্রতিবাদ জারি থাকবে।
এদিন দুপুরে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি নিয়ে দিদির দূত হিসেবে বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যান বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারম্যান সমর মুখার্জি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রেজিনা পারভিন, মালদা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ দীনেশ টুডু, জেলা পরিষদ সদস্য সাগরিকা সরকার, বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নার্গিস পারভিন সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। বাবুপুর পৌছানোর পরেই এই প্রতিনিধি দলকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ। তৃণমূলের পতাকা কাঁধে নিয়ে দিদির দূতদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বাকবিতণ্ডা।
বাবুপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন মিঞার অভিযোগ, ‘আমি নিজেও একজন বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। কিন্তু এখানে সদস্যদের কিছু জানানো হয় না। বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে লুটপাট চলছে। বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা নয় ছয় করা হয়েছে। শুধু দুর্নীতি চলছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং বাবুপুর অঞ্চল সভাপতি সহ তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। আবাস যোজনার ঘর থেকে শুরু করে বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা সবকিছুতেই কাট মানি নেওয়া হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই যে সমস্ত তৃণমূল কর্মী মন প্রাণ দিয়ে দলটা করেন তারা চরম ক্ষুব্ধ। আর তারাই আজকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছেন। এইরকম দুর্নীতি চলতে থাকলে তৃণমূল দলটা উঠে যাবে। তাই যারা সাচ্চা তৃণমূল কর্মী তারা দলটাকে বাঁচানোর জন্য প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। আমরা জেলা নেতৃত্বকে কাছে পেয়ে আমাদের ক্ষোভের কথা তাদের বলেছি।
যদিও বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মালদা জেলা কমিটির চেয়ারম্যান সমর মুখার্জির বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রতিটি মানুষের জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এমন কোন বাড়ি নেই যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প পৌঁছে যায়নি। আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি সকলেই এই প্রকল্পগুলির অংশীদার হতে পেরেছেন কিনা। আর এতেই মাথা ব্যথা হয়েছে বিরোধীদের। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি সবাই একযোগে আমাদের বিরোধিতা করতে মাঠে নেমে পড়েছে। মানুষের উন্নয়নের জন্য কোন বার্তা তাদের নেই। তারা চাইছে ঘোলা জলে মাছ ধরতে। সাধারণ মানুষ সব কিছু বুঝতে পারছেন।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের মধ্যে একজন হলেন তৃণমূলের বাবুপুর অঞ্চল সভাপতি সেরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাবুপুরের এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সহ একাধিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে গ্রামের প্রতিটি এলাকায়। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সেগুলো যাতে সাধারণ মানুষ পেতে পারেন তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি। তবে এটা ঠিক এদিন দলের অঞ্চল কমিটির চেয়ারম্যানকে ঘিরে কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তবে এরা সবাই তৃণমূলের লোক নন। এর পেছনে চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন মিঞার অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। দলের ভেতরের বিষয় আমরা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাবো। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন।
লেটেস্ট খবর জানার জন্য দেখুন www.uttarbangasambad.com এবং ব্রেকিং নিউজ (Breaking News) এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন উত্তরবঙ্গ সংবাদ টিভিতে ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Instagram পেজ ।