শিলিগুড়ি: দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ নির্মাণ চলছিল। একাধিকবার নোটিশ দিলেও কাজ হয়নি। বরং দ্বিতল বানিয়ে সেখানে বসতি শুরু করেছিল কয়েটি পরিবার। শুক্রবার ডাবগ্রাম রেঞ্জের নেপালিবস্তি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আর্থমুভার দিয়ে অবৈধ নির্মাণ গুড়িয়ে দিল বন দপ্তর(Forest Department)। বৈকণ্ঠপুর ডিভিশনের এডিএফও মঞ্জুলা তিরকের উপস্থিতিতে ডাবগ্রাম রেঞ্জের বনকর্মীরা ওই নির্মাণ গুড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ নির্মাণ করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এদিনের এই অভিযানে ডাবগ্রাম রেঞ্জকে সহযোগীতা করেছে সারুগারা, তারঘেরা এবং আপলচাঁদ রেঞ্জের বনকর্মীরা। পাশাপাশি কোনও প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এনজেপি থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে কাজ করে অবৈধ নির্মাণ গুড়িয়ে দিয়ে প্রায় ০.৬ হেক্টর জমি পুনরুদ্ধার করেছে বন দপ্তর।
বৈকণ্ঠপুর ডিভিশনের এডিএফও মঞ্জুলা তিরকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বন দপ্তরের জমি দখল করে বিক্রি করা হয়েছিল এবং সেখানে অবৈধ নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা একাধিকবার নোটিশ দিয়েছি। এরপরেও কাজ না হওয়ায় আজ বন দপ্তরের জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এই জমিতে আমরা গাছ লাগাব।‘
ছয় মাস আগে উত্তরবঙ্গ সংবাদে বৈকণ্ঠপুরের জঙ্গল দখল হওয়ার ধারাবাহিক খবর প্রকাশিত হয়। বন দপ্তরের জমি দখল করে বিক্রি করে সেখানে অবৈধ নির্মাণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরেই জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে জমি মাপজোখ শুরু করে বন দপ্তর। এতে দেখা যায় বৈকণ্ঠপুরের জঙ্গলে এবং সংলগ্ন এলাকায় বন দপ্তরের কয়েকশো হেক্টর জমি দখল হয়ে গিয়েছে। সেই জমি পুনরুদ্ধারে নামে বন দপ্তর। এর আগে ডাবগ্রাম রেঞ্জের একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হেক্টর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এরপরেই নেপালিবস্তি সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশেই বন দপ্তরের একটি জমিতে অবৈধ নির্মাণের কথা জানতে পারে ডাবগ্রাম রেঞ্জ। অভিযোগ, ওই এলাকায় থাকা বন দপ্তরের ০.৬ হেক্টর জমি দখল করে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিষয়টির খোঁজ পেয়ে অভিযুক্তকে নোটিশ করে বন দপ্তর। কিন্তু নোটিশ দিতেই স্থানীয় দালালেরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। অভিযুক্তকে বাড়ি ছাড়তে মানা করে। তাই নোটিশে সময় পার হয়ে যাওয়ায় এদিন সকালে সাড়ে আটটা নাগাদ আর্থমুভার এবং বনকর্মীদের নিয়ে এলাকায় হাজির হয় ডাবগ্রাম রেঞ্জ। রেঞ্জার শ্যামাপ্রসাদ চালকাদারের নেতৃত্বে শুরু হয় জমি পুনরুদ্ধারের কাজ। ওই বাড়িতে যারা আবাসিক ছিলেন আগে তাদের সমস্ত সামগ্রী বাইরে বের করার সময় দেওয়া হয়। আবাসিকেরা সামগ্রী বের করার পর আর্থমুভার দিয়ে কংক্রিটের দ্বিতল ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর খুঁটি পুতে তার দিয়ে গোটা এলাকা ঘিরে দেয় বন দপ্তর। কিছুদিনের মধ্যেই ওই জমিতে বৃক্ষরোপণ করবে বন দপ্তর। এদিকে শুক্রবারের অভিযানের পরেই ঘুম উড়েছে বাকি দখলদারদের। যারা বন দপ্তরের জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ করেছে তাদের অনেকেই জায়গা ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, বৈকণ্ঠপুর ডিভিশন এলাকায় সমস্ত দখলদারদের নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। নোটিশের মধ্যে বন দপ্তরের জমি খালি করে দিলে ভালো নয়তো সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন এডিফেও মঞ্জুলা তিরকে।
এদিকে, দখলদার অমিত ছেত্রী বলেন, ‘অনেকে এখানে বন দপ্তরের জমিতে থাকে। আগে তো কিছু বলা হত না। নতুন রেঞ্জার এসেই আমাদের নির্মাণ ভেঙে দিল।‘
লেটেস্ট খবর জানার জন্য দেখুন www.uttarbangasambad.com এবং ব্রেকিং নিউজ (Breaking News) এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন উত্তরবঙ্গ সংবাদ টিভিতে ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Instagram পেজ ।