ময়দানে বল পায়ে সুনীতা সরকার। (নিচে) বুলি সরকার
সৌরভ রায়, কুশমণ্ডি : ক্রীড়াক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিভা উপহার দিয়ে চলেছে কুশমণ্ডির সরলা ভূপেন্দ্রনাথ বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্রী এবার শতবর্ষ পার করে আসা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মহিলা ফুটবল দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। এই দুই ছাত্রীর মধ্যে সুনীতা সরকার আবার দলের ক্যাপ্টেন। অন্যদিকে, গোলকিপার হয়েছেন বুলি সরকার। দুজনেই বর্তমানে পড়াশোনার জন্য কলকাতায় থাকেন। তবে ফুটবলে তাঁদের হাতেখড়ি সরলা ভূপেন্দ্রনাথ হাইস্কুল থেকেই। স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্রীর এই সাফল্যে স্কুলের পড়ুয়া, কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি খুশি কুশমণ্ডির মানুষ। দুই ছাত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেযারপার্সন অর্পিতা ঘোষ। আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলবেন সুনীতা ও বুলি।
সুনীতার বাড়ি কুশমণ্ডির পুপুরা গ্রামে। বাবা ক্ষীরোদ সরকার প্রান্তিক কৃষক। মা বাসন্তী সরকার গৃহবধূ। কয়েক বছর আগে স্কুলের গণ্ডি টপকে সুনীতা দেশের অনূর্ধ্ব সতেরো মহিলা ফুটবল দলের হয়ে শ্রীলঙ্কায় খেলতে যান। নিজের স্কুলের হয়ে দু’বারের সুব্রত কাপ চ্যাম্পিয়ন ও সুব্রত কাপ রানার্স সহ দেশের বহু রাজ্যে জাতীয়স্তরের খেলার অভিজ্ঞতা আছে সুনীতার। অপরদিকে, বুলি সরকারের বাড়ি তেলিবাড়ি গ্রামে। বাবা সুশীল সরকার ও মা সুনতি সরকারের দুই মেয়ে, এক ছেলের মধ্যে বুলি মেজ। সুনীতার মা বাসন্তী সরকার ও বুলি সরকারের মা সুনতি সরকার জানান, গ্রাম থেকে গিয়ে তাঁদের মেয়ে যে কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ক্যাপ্টেন ও গোলকিপার হতে পারবে সেই স্বপ্ন তাঁরাও দেখেননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ সরকার বলেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে আমার স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্রী সুনীতা ও বুলি মনোনীত হয়েছে, এর চাইতে বড় পাওনা আর কিছু নেই।
ক্যাপ্টেন হয়ে প্রথম ম্যাচেই জয় পেয়েছেন সুনীতা। প্রতিপক্ষকে ইস্টবেঙ্গল ৬-০ গোলে হারিয়েছে। কলকাতা থেকে সুনীতা বলেন, ‘কোনোদিন ভাবিনি ইস্টবেঙ্গলে খেলব বা অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পাব। এখন কোনো কিছু না ভেবে নিজের কাজটাই করে যেতে চাই।’ প্রথম ম্যাচে ক্লিনশিট রাখার পর গোলকিপার বুলি সরকার বলেন, ‘যে দায়িত্ব নিয়ে ইস্টবেঙ্গলে এসেছি, সেই দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই। বল আর মাঠ ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবছি না।’
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘ওই দুই মেয়ে আমাদের জেলার তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করেছে।’ সুনীতা ও বুলিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কুশমণ্ডির বিডিও শৈপা লামা, উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট ফুটবলার সুভাষ দাস।