মাথাভাঙ্গা : করোনার সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসাকরা। কিন্তু এই সময় মাথাভাঙ্গা শহর ও সংলগ্ন এলাকায় নাবালক এমনকি শিশুদেরও সবজি বিক্রি করার কাজে লাগানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন শহরের বাসিন্দারা। সংসার চালানোর প্রযোজনে অনেক মানুষই এখন সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করছেন। কিন্তু ছোটদের সেই কাজে লাগানো বা তাদের সঙ্গে নেওয়া উচিত নয় বলে শহরের বাসিন্দারা মনে করেন।
এমনই দৃশ্য দেখা গেল মাথাভাঙ্গা শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌপথিতে। সেখানে বন্ধ দোকানের বারান্দার সিঁড়িতে বসে আনারস বিক্রি করছিল এক শিশু। শিশুটির বাবা পাশেই তরমুজ বিক্রিতে ব্যস্ত। ওই ব্যক্তি জানান, লকডাউন শুরুর আগে তাঁর পেশা ছিল লটারি টিকিট বিক্রি। লটারি টিকিট বিক্রি করে যা আয় হত, তা দিয়ে কোনওমতে সংসার চলত। তবে লকডাউনের ফলে লটারি টিকিট বিক্রির ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফুটপাথে বসে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুকে বাড়ির বাইরে এনে দোকানে বসানো ঠিক হয়নি। শহর ও সংলগ্ন এলাকায় এরকম অনেক ঘটনাই ঘটছে। শিবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রূপম সাহা বলেন, শিশুদের আনারস, শাকসবজি বিক্রি করতে হচ্ছে- এটা খুব অস্বস্তিকর। দুঃস্থ পরিবারগুলি আর্থিক সাহায্য পেলে সমস্যা মিটত। পঞ্চায়েত ও পুরসভা স্তরের জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরা মাঠে নেমে এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন।
মাথাভাঙ্গার পুরপ্রধান লক্ষপতি প্রামাণিক বলেন, চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা যখন বারবার সতর্ক করছেন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে, তখন লকডাউন চলাকালীন শিশুদের দিয়ে ব্যবসা চালানো গর্হিত কাজ। এর আগেও মাথাভাঙ্গা শহরে ট্রাকে তরমুজ তোলায় শিশুদের কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল। আর এবার শিশুকে দিয়ে আনারস ও শাকসবজি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কোনও অবস্থাতেই শিশুদের কাজে লাগানো মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। মাথাভাঙ্গার অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার পি কে সর্দার বলেন, লকডাউনের কারণে অফিস বন্ধ থাকায় বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। তবে শিশুদের কোনও অবস্থাতেই এ ধরনের কাজে লাগানো উচিত নয়। লকডাউনের সময় তো আরও নয়।