মালবাজার: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সোমবার দুপুরে তুলকালাম মালবাজার(Malbazar) পুরসভায়। কাউন্সিলর থেকে তৃণমূল নেতারা পুরসভা চত্বরে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়ান বলে অভিযোগ। পরষ্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। মাল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর পুলিন গোলদারের অভিযোগ, পুর ভবনে ঢোকার মুখে তাকে নিগৃহীত করা হয়েছে। তার মুখে আঘাত লেগেছে। পুলিনবাবুর অভিযোগের তীর ছিল মাল শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অমিত কুমার দের দিকে। যদিও পালটা অভিযোগে অমিত কুমার দে জানিয়েছেন, । ঐ কাউন্সিলরের সাথে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ঝামেলা হয়। এখানে কেউ দলের ঝান্ডা নিয়ে আসেন নি। তিনি উল্টে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করেছি। পুলিন গোলদারে ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অজয় লোহারও তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পুলিন বাবুর হাতেও এক মহিলা নিগৃহীত হয়েছেন বলে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে। ঐ মহিলাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে একসময় কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সকলকে নিয়ে বৈঠক করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। দেড়ঘন্টা বৈঠকের পরও কাউন্সিলররা বের হলে সমর্থকরা তাঁদের নিয়ে টানা হেঁচড়া শুরু করে দেন। পুলিন গোলদার জানান, দলীয়ভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডের দলের পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ বেশ কিছু ওয়ার্ডে যারা গত নির্বাচনগুলিতে বিজেপির হয়ে কাজ করেছিল তাদেরকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মাল শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অমিত কুমার দে বলেন, যারা এখন নানা অভিযোগ করছেন তারাই একসময় বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সাথে বৈঠক করতেন। মাল পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন সাহা জানান, এটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। ভুল বোঝাবুঝির জন্য ঘটনা ঘটেছে। আলোচনার মাধ্যমেই তা মিটে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা মালের বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী বুলু চিক বড়াইক বলেন, ‘আমি বর্তমানে বাইরে রয়েছি। মালবাজারে এদিন ঠিক কি বিষয় হয়েছে খোঁজ নিচ্ছি।’ এদিকে বিরোধীদলগুলি এদিনের পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো কটাক্ষ করেছে। বিজেপির মাল শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি নবীন সাহা বলেন, ‘বঙ্গ জুড়ে যে উন্নয়নের রাজনীতি চলছে তার ঢেউ আজ মাল পুরসভার চত্বরেও আছড়ে পড়েছে। এদিনের ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ভাগাভাগির গোষ্ঠী রাজনীতিরই জের।’ সিপিএমের মাল এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজা দত্ত বলেন, ‘এসবই বিরোধীদের শূন্য করার ফল। পুর পরিষেবা লাটে উঠেছে। শাসকদলে গোষ্ঠী কোন্দল ছাড়া আর কিছুই নেই। যেন সেই সত্তরের দশক ফিরে আসছে।’ অবিলম্বে এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বন্ধ করতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি। সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে পুলিশও। মাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রবীন থাপা বলেন, আমরা এদিনের ঘটনাক্রম নিয়ে নজরদারি রাখছি।