হরিশ্চন্দ্রপুর: জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরকে এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জল প্রকল্প নির্মাণ করার জন্য জমি দান করেছিলেন স্থানীয় এক যুবক। আশ্বাস মিলেছিল সেই জমিতে জল প্রকল্প হলে দুটি ক্যাজুয়াল অপারেটরের চাকরি মিলবে। এরপর সেই জমি রেজিস্ট্রি হয়ে যায়। মাটির পরীক্ষা করার পর পাম্প বসার জন্য মেশিনও চলে আসে। কিন্তু পরবর্তীতে আর কাজ হয়নি। পার্শ্ববর্তী এলাকার এক তৃণমূল কর্মীর জমিতে বসছে সেই পিএইচই। ওই যুবক বারবার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং দপ্তরে গিয়েও ঘুরে এসেছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে ওই যুবকের সমর্থনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকাবাসী।
জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত আঙ্গারমুনি গ্রামের বাসিন্দা পাপ্পু দাস। ওই এলাকায় আঙ্গারমুনি, বড়োল, কাহাট্টা সহ বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জলের ভীষণ সংকট। এর আগে পানীয় জলের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে এলাকাগুলিতে। সেইসময় বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন এলাকায় পিএইচই বসবে। পিএইচইর জন্য বিভিন্ন এলাকায় জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। এই এলাকায় জমি দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন পাপ্পু দাস। অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এই জমির বিনিময়ে তাঁকে দুটো চাকরি দেওয়া হবে পিএইচইতে। পাপ্পুর প্রায় ছাব্বিশ শত জমি পিএইচইর জন্য রেজিস্ট্রি করে দেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের নামে। তারপর দপ্তরের তরফে মাটি পরীক্ষা করা হয়। পাম্প বসার জন্য মেশিন চলে আসে। ৪ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কাজের টেন্ডার হয়ে যায়। কিন্তু পরে আর কাজ শুরু হয়নি। মেশিন নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া হয়। পাপ্পু খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পার্শ্ববর্তী এলাকায় রব্বানী নামে তৃণমূল কর্মীর জমিতে এই পিএইচই হচ্ছে। এই খবর শুনে হতাশ হয়ে পড়ে এলাকার লোকেরাও। পাপ্পু এরপর বিধায়ক এবং দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে যান। কেন পিএইচই বসল না সেই নির্দিষ্ট কারণ না বলে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। পাপ্পু এবং এলাকাবাসীর আশঙ্কা এর নেপথ্যে রয়েছে কাটমানি। হয়তো বিধায়কের লোকেরা কাটমানির ভিত্তিতে পিএইচইর কাজ অন্যত্র করাচ্ছেন। এর প্রতিবাদেই এদিন টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় পাপ্পু, তাঁর পরিবার এবং এলাকার গোটা গ্রামবাসী। পাশাপাশি পাপ্পু দাস জেলা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ন্যায় বিচারের জন্য। এলাকাবাসীদের দাবি, এই পিএইচই যাতে তাঁদের জমিতে বসে।
এলাকার বিধায়ক নিহাররঞ্জন ঘোষ জানান, ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। এলাকায় সঠিকভাবে জল সরবরাহ করার জন্য ওই জমিতে পিএইচই বসানো যাবে না। সেক্ষেত্রে জলসংকট থেকেই যাবে। তাই দপ্তরের লোকেরা অন্যত্র কাজ করছে। পাপ্পু তাঁর জমি নিয়ম অনুযায়ী ফেরত পেয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের চাঁচল মহকুমার এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুমিত ঘোষ বলেন, ‘উনি প্রথমে যে জমির কথা বলেছিলেন তার সামনে রাস্তা ছিল। কিন্তু পরে উনি পেছন দিকের জমি দিয়েছেন যাতে কোন রাস্তা নেই তাই আমরা ওনার জমি আর নিচ্ছি না।‘