বাঁকুড়াঃ নিজের অগ্নিসাক্ষী করা স্ত্রীর সিঁথির সিঁদুর মুছে তাঁর প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিলেন স্বামী। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার(Bankura) বড়জোড়া থানার শালগাড়ায়। এই ঘটনায় তোলপাড় গোটা গ্রাম। গ্রামবাসীদের বাহবা কুড়িয়েছেন স্বামী। এ যেন এক সিনেমার চিত্রনাট্য। মনে করিয়ে দিল ‘হাম দিল দে চুকে সনম’-সিনামার দৃশ্য। একই ঘটনা যে বাস্তবেও হতে পারে, তা হয়ত ভাবনারও অতীত। এই ঘটনা হার মানাল সিনেমাকেও।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার শালগাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাখি বাগদীর বিয়ে হয় বর্ধমানের আউসগ্রামের অভিরামপুরের বাসিন্দা প্রদীপ বাগদীর। তাদের একটি কণ্যা সন্তানও রয়েছে। বাপের বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে বাপের বাড়ি শালগাড়া গ্রামেরই এক যুবক সুরেশ বাউরীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে রাখি বাগদী। এই ঘটনা বেশিদিন গোপনে থাকেনি। রাখি ও সুরেশের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা লোকমুখে জানতে পারেন রাখির স্বামী প্রদীপ। কথা বলেন রাখির প্রেমিক সুরেশের সঙ্গেও। কোন সাংসারিক ঝামেলার মধ্যে না গিয়ে নিজের স্ত্রীকেই তাঁর প্রেমিকের হাতে সঁপে দেন প্রদীপ। বিয়ের সব আয়োজন নিজের হাতেই করেন তিনি। সত্যি এ এক নজিরবিহীন ঘটনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধেয় শালগাড়া গ্রামেরই এক মন্দিরে উপস্থিত হয়ে প্রদীপ বাগদী মাথায় জল ঢেলে স্ত্রীর সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেলেন। এরপর রাখির প্রেমিক সুরেশ বাউরী সেই সিঁথিতে সিঁদুর পড়িয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পুরো ঘটনাই ঘটল গ্রামবাসীদের সাক্ষী রেখে। সাক্ষী থাকলেন রাখির প্রাক্তণ স্বামী প্রদীপ বাগদিও। প্রাক্তন জামাইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার সাক্ষী থাকলেন রাখির মা মিনতি বাগদী।
এই প্রসঙ্গে মিনতি বাগদি বলেন, ‘জামাই আমার খুব ভালো। ঐ নতুন জামাই আমার চাইনা।’ তাঁর দাবি, তাঁর মেয়ের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতেন না। প্রদীপ বাগদি জানিয়েছেন, ‘এছাড়া তার হয়তো কিছুই করার ছিলনা! নিত্য অশান্তি থেকে নিস্তার পেতেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। স্ত্রী যাঁকে ভাসবাসেন তাঁর কাছেই থাকা দরকার। স্ত্রীর বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়ি আউসগ্রামে ফিরে যান তিনি। এই ঘটনা আপাতত গ্রামের লোকের মুখে মুখে।