রায়গঞ্জ: কথা না শুনলেই বিপদ। ঘরের বাইরে বের হলেই সটান করে ধরবে যমরাজ। তার সঙ্গে রয়েছে করোনা ও প্রশাসন। লাল হলুদ পোষাক পরে আজ সকাল থেকেই রায়গঞ্জ শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়িয়েছে যমরাজ। এই যম সত্যি নয়। তবে করোনার সময়ে রাস্তায় বেরোলে সত্যিকারের যম দর্শন হতে পারে। কোভিড-১৯ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ নিয়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তিন ব্যাক্তিকে তিন রুপে সাজিয়ে রায়গঞ্জের মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাতেই এই উদ্যোগ। যমরাজ, করোনা ও প্রশাসনের বেশে সেজে মানুষের কাছে গিয়ে বলছেন, ‘আমি যমরাজ, আমি করোনা ভাইরাস, আমি প্রশাসন। ঘরে থাকলে নেব না। বাইরে বের হলেই ধরে নিয়ে যাব। মানুষকে শুধু ভয় দেখাচ্ছে না সেইসঙ্গে সচেতনও করছে।
লকডাউনে স্তব্দ দেশ। থমকে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রতিদিন কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের আতঙ্কও বাড়ছে। তবে লকডাউন বিধি ভেঙ্গে অনেকেই বিনা কারনে রাস্তায় বের হচ্ছেন। নরমে-গরমে নাছোড় মানুষদের বোঝানোর গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তা সত্বেও বিভিন্ন আছিলায় বাইক নিয়ে, আবার কখনও পায়ে হেটেই শহর ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ছেন শহরবাসী। মাঝেমধ্যে পুলিশ কর্মীরা ধড়পাকড় করলেও বাইরে বের হওয়ার প্রবনতা কমছে না। লকডাউনের গুরুত্ব ও সচেতন করতে পুলিশকর্মীরা ব্যান্ড বাজিয়ে শহর পরিক্রমা করছেন। এবারে লকডাউনের গুরুত্ব বোঝাতে যমরাজ, করোনা ও প্রশাসন বেশে রাস্তায় হাজির করা হল স্থানীয় শিল্পীদের। এক হাতে গদা ঘুরিয়ে অন্য হাতে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন ঘরে ঘরে।
‘যদি রাস্তায় নামো তাহলে আমরা ধরবো। করোনা আক্রমণ করবে। প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আর যদি ভালোভাবে জীবন কাটাতে চাও, সুস্থ থাকতে চাও, তাহলে বাড়িতে থাকো।’ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে এই স্লোগান দিয়েছে যমরাজ। কেউ রাস্তায় বের হলেই গদা এদিক ওদিক ঘুরিয়ে পাকড়াও করেছেন কাউকে। আবার দু’চোখ বড়োবড়ো করে ধমক দিয়ে বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন যমরাজ। সাধারন মানুষ রাস্তায় এমন যমরাজকে দেখে প্রথমে ঘাবড়ে যায়। পরে বিষয়টা বুঝতে পেরে বাড়িতে ঢুকে যান। বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের ভয়ঙ্কর দিকটা বোঝাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষের মনোরঞ্জন হবে আবার লকডাউনের গুরুত্ব বুঝতে পারবে। আজ রায়গঞ্জ শহরে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।আগামীদিনে গ্রামেও এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’